বার্মিজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল

কক্সবাজার পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

জানা গেছে, ১৮৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্বিতীয়তলা বিদ্যালয়টির অফিস কক্ষ-সহ ৭ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে প্রায় দুই বছর পূর্বে। সে হিসেবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও ঝুঁকি নিয়ে ভবনে চলছে পাঠদান। প্রতিনিয়তেই আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি ভবনটি যেকোন মুহুর্তে ধসে পড়া আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিপূর্বেই শিক্ষার্থীর মাথার উপরে ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে ছাত্র-ছাত্রী আহতের ঘটনা ঘটেছিল। তারপরও কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই। এমন দুরবস্থার চিত্র দেখা গেছে বার্মিজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সরেজমিনে স্কুল গিয়ে দেখা গেছে, পিলার ও ওয়ালে বড় বড় ফাটল, বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। রড বের হয়ে মরিচা পড়ে সরু হয়ে গেছে। জানালা-দরজা ভাঙ্গা। ভবনের অভাবে তারপরও ক্লাস হচ্ছে পরিত্যক্ত ভবনে। বৃষ্টি হলেই তাদের স্কুল ছেড়ে বাড়ি যেতে হয়। বৃষ্টির পানি পড়ে বই খাতা ভিজে যায়। ৫২৭ জন শিক্ষার্থীর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনে বাধ্য হয়েই শিক্ষকদের ক্লাস নিতে হয়। বর্তমানে ভয়ে অনেক ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। তবে বৃষ্টির সময় ছাদ চুয়ে পানি পড়ার কারণে ক্লাস নেয়া সম্ভব হয়না। তখন ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দিয়ে দেয়া হয়।

৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী রুজিনা আক্তার জানায়, স্কুলের ক্লাস কক্ষে ঢুকলেই ভয় লাগে। এমনকি ক্লাস চলাকালীন সময়ও মাথার উপর ছাদে চোখ যাই। কখন ছাদ খসে পড়ে আমাদের মাথায়। ফলে পড়ার প্রতি তেমন মনোযোগ থাকেনা। এদিকে বৃষ্টি হলে আমাদের বই খাতা ভিজে যায়, ক্লাস চলাকালিন ছাদের প্লাস্টার মাথার ওপর খসে পড়ে আমাদের কয়েকজন বন্ধু আহত হয়েছিল। একই কথা বলেন, ৫ম শ্রেণির ছাত্রী কামরুন নাহার-সহ অসংখ্য শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমত আরা বেগম বলেন, এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করছি। তবে ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে প্রায় দুই বছর যাবত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা-সহ অনত্রে ক্লাস নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কোথাও ক্লাস নেয়ার স্থান না পেয়ে অপরাগতায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই আমাদের ক্লাস নিতে হয়। প্রতিনিয়তেই আমরাও অতঙ্কে আছি। খুব দ্রুত আমাদের একটি ভবন প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সহকারী উপজেলা কর্মকর্তা মোঃ আবু শামিম জানান, ওই বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ তা আমরা অবগত রয়েছি। ভবনটি যেকোন মুহুর্তে ধসেও পড়তে পারে। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর তালিকা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে কাজ করা
হবে।